বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন
শহীদ উল্লাহ : লাইলা বেগম, যেন এক সংগ্রামি নারীর নাম। স্বামী কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার পুরাতন পল্লান পাড়ার নুর হোসেন গত ২৫ বছর ধরে অসুস্থ। ফলে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে নিজেকে। গত ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন বাড়িতে বাড়ি গিয়ে কাপড় বিক্রি করে চালিয়ে আসছিলেন সংসার।
এবার সেই লাইলা বাজারে সবজির মূল্য বৃদ্ধির পর কম মূল্যের সবজির দোকান নিয়ে বসেছেন খোলা আকাশের নিচে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় টেকনাফ বাস স্টেশন আবু সিদ্দিক মার্কেটের সামনে খোলা আকাশের নিচে সবজি সাজিয়ে রাখা দোকানে কথা হয়েছে লাইলার সাথে। তার দোকানে অন্য দোকানের চেয়ে কম মূল্য হওয়ায় ক্রেতার ভিড়ও ছিলে স্বাভাবিক। আর এক নারী টেকনাফের মতো বাজারে সবজির দোকান করার খবরে দেখতেও আসছেন অনেকেই।
লাইলা বেগম জানান, স্বামী ভারসাম্যহীন হওয়ায় সংসারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। দীর্ঘ ২৫ টি বছর ছেলে মেয়ে লালন পালন করতে এলাকায় এলাকায় কাপড় বিক্রি করতেন। মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করতেন। বাজারে তরকারির দাম বেড়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করে একটা তরকারির দোকান দেন। ঋণের টাকা নিয়ে মাকের্টের ব্যবসায়ীদের অনুমতিক্রমে খালি জায়গা দোকান দেন।
তিনি বলেন, সকালে ঘুমধুম, আলিকদম, রামুসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সবজি সংগ্রহ করে টেকনাফ বাজারে কম দামে বিক্রি করে যাচ্ছেন এক সপ্তাহ ধরে। তবে এখানে অনেক বাধাবিপত্তি এসেছে। কম দামে তরকারি বিক্রি করার কারণে সিন্ডিকেটর অনেকেই আমাকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টাও করছে। তারপরও আমি থেমে যায়নি। আমার ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছি। কম দামে বিক্রি করেও প্রতিদিন ১ থেকে ২ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। এই টাকায় আমার সুন্দর সংসার চলছে।
লাইলা জানান, আমরা ৭ জনের পরিবার বড় দুই ছেলে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। ছোট ছেলে আমাকে কাজে সহযোগিতা করে। এক মেয়ে ইসমতারা বিয়ে হয়েছে স্বামী মারা গেছে সেও আমার সাথে থাকে আমাকে সহযোগিতা করে। আরেক মেয়ে পড়া লেখা করে। আলহামদুলিল্লাহ এই টাকায় আমাদের সংসার ভালো ভাবে চলছে।
সাধারণ ক্রেতা ইসমাইল বলেন, আমরা কম দাম তরকারি পাচ্ছি। খবর পেয়ে এই দোকানে চলে এসেছি। দেখছি সব দোকানের চেয়ে এই দোকানে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। অনেক মানুষ এইখান থেকে তরকারি ক্রয় করতে দেখা যাচ্ছে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply